বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম দুই সমন্বয়ক সারজিস আলম ও হাসনাত আব্দুল্লাহকে অবাঞ্ছিত ঘোষণার প্রতিবাদে রংপুরে প্রতিবাদ সমাবেশ ও বিক্ষোভ মিছিল করেছেন সেখানকার শিক্ষার্থীরা।
সোমবার দিনগত মধ্যরাতে রংপুর নগরীর মেডিকেল মোড় থেকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থীরা এই বিক্ষোভ মিছিল বের করেন।
বিক্ষোভ মিছিল থেকে অবিলম্বে জাতীয় পার্টিকে ক্ষমা চাওয়াসহ বিতর্কিত বক্তব্য প্রত্যাহারের আহ্বান জানানো হয়। নয়তো ছাত্র-জনতা ঐক্যবদ্ধভাবে জাতীয় পার্টির বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলবে বলে হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়।
অন্তর্বর্তী সরকার জাতীয় পার্টিকে সংলাপে ডাকার জেরে গত ৭ অক্টোবর দিবাগত মধ্যরাতে নিজ নিজ ফেসবুক পেজে এই বিষয়ে পোস্ট দিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন সারজিস ও হাসনাত। পোস্টে সারজিস লেখেন, ‘জাতীয় পার্টির মতো মেরুদণ্ডহীন ফ্যাসিস্টের দালালদের প্রধান উপদেষ্টা কীভাবে আলোচনায় ডাকে?’
অন্যদিকে হাসনাত লিখেছিলেন, ‘স্বৈরাচারের দোসর জাতীয় পার্টিকে সংলাপে আমন্ত্রণ জানানো হলে, আমরা সেই আত্মঘাতী সিদ্ধান্তের তীব্র প্রতিবাদ ও কঠোর বিরোধিতা করব।’
দুই সমন্বয়কের এমন স্ট্যাটাসের এক সপ্তাহ পর সোমবার রাতে রংপুর মহানগর ও জেলা জাতীয় পার্টির যৌথ সভা অনুষ্ঠিত হয়। ওই সভা থেকে রংপুরে সারজিস ও হাসনাতকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেন পার্টির কো-চেয়ারম্যান ও রংপুর সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা।
তিনি বলেন, ‘জাতীয় পার্টিকে রাজনৈতিক সংলাপে না ডাকতে ফেসবুকে সারজিস আলম ও হাসনাত আব্দুল্লাহ যে ঘোষণা দিয়েছে- তারা রংপুরে আসতে পারবে না। যার যা কিছু আছে তাই নিয়ে এই রংপুরের পার্টি অফিসে বসে থাকবেন। আমরা দেখিয়ে দিতে চাই, রংপুরে জাতীয় পার্টির শক্তি কতটুকু। যদি এই আন্দোলনকে আমরা জনস্রোত করতে না পারি, তাহলে জাতীয় পার্টি থেকে নাকে খত দিয়ে চলে যাবো।’
সারজিস ও হাসনাতের পোস্টের বিষয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে মোস্তাফিজুর রহমান মোস্তফা হুঁশিয়ারি দেন, ‘রংপুরের মাটিতে সারজিস আলম এবং হাসনাত আব্দুল্লাহর কোনো প্রোগ্রাম হতে দেওয়া হবে না।’
তিনি আরো বলেন, ‘এই বক্তব্যের মাধ্যমে জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার, ডিআইজি, পুলিশ কমিশনার- আপনাদেরকে জানিয়ে দিতে চাই, জাতীয় পার্টিকে বাদ দিয়ে কোনো আলোচনা নয়। রংপুরে কোনো রাজনৈতিক সংলাপে যদি জাতীয় পার্টিকে ডাকা না হয়, সম্মান দেওয়া না হয়- তাহলে জাতীয় পার্টি নিজেই অধিকার আদায় করে নেবে। এর জন্য আপনারা প্রস্তুত থাকবেন।’
মোস্তাফিজুর রহমান মোস্তফার এসব বক্তব্যের প্রতিবাদেই এদিন মধ্যরাতে বিক্ষোভ মিছিল করেন রংপুরের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। তারা বলেন, ‘সারজিস আলম, হাসনাত আব্দুল্লাহরা জুলাই-আগস্ট বিপ্লবের নায়ক। তাদের অবাঞ্ছিত করার এখতিয়ার জাতীয় পার্টির নেই।
Sharing is caring!