সৌদি আরবকে বাংলাদেশে আরও বেশি বিনিয়োগ করার আহ্বান জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। একইসঙ্গে দুই বন্ধুপ্রতিম দেশের মধ্যে সম্পর্ক আরো জোরদার করতে জ্বালানি ও অর্থনৈতিক সহযোগিতা বৃদ্ধির প্রত্যাশা ব্যক্ত করেছেন তিনি।
সোমবার রাজধানীর তেজগাঁওয়ে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে বাংলাদেশে নিযুক্ত সৌদি রাষ্ট্রদূত ইসা ইউসুফ ইসা আল দুহাইলান ড. ইউনূসের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করতে এলে তিনি এ আহ্বান জানান।
সৌদি আরবের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ককে ‘অনন্য’ ও ‘আলাদা’ হিসেবে অভিহিত করে ড. ইউনূস বলেন, ‘এখন আমরা এমন একটি সময় পার করছি, যখন সৌদি আরব আমাদেরকে সর্বোচ্চ সমর্থন দিতে পারে।’
প্রধান উপদেষ্টা সৌদি আরবকে বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংকে তহবিল জমা রাখার আহ্বান জানিয়ে বলেন, অর্থনৈতিক সহযোগিতার অংশ হিসেবে এ ধরনের উদ্যোগ তারল্য সহায়তা বৃদ্ধি করবে। এছাড়া এটি ‘অন্তর্বর্তী সরকারের জন্য একটি চমৎকার অঙ্গীকার’ বলেও উল্লেখ করেন।
তিনি সৌদি আরবকে সহজ শর্তে জ্বালানি ও পেট্রোলিয়াম পণ্য সরবরাহ, ব্যবসা-বাণিজ্য সম্প্রসারণ এবং বাংলাদেশি তরুণদের প্রশিক্ষণের জন্য বিনিয়োগের আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, প্রশিক্ষণের জন্য বিনিয়োগ করলে ঢাকা থেকে সৌদি আরবে আরো বেশি দক্ষ ও প্রশিক্ষিত কর্মী পাঠানো সম্ভব হবে।
রাষ্ট্রদূত আল দুহাইলান সৌদি আরবে বাংলাদেশি প্রবাসীদের অবদানের প্রশংসা করে বলেন, প্রবাসী বাংলাদেশিদের দক্ষতা বাড়ানো গেলে তারা আরো বেশি বেতন পাবেন এবং দেশে অনেক বেশি রেমিটেন্স পাঠাতে সক্ষম হবেন।
বর্তমানে প্রায় ৩০ লাখ বাংলাদেশি সৌদি আরবে কর্মরত আছেন এবং প্রতি বছর তারা বিলিয়ন ডলারের রেমিটেন্স দেশে পাঠিয়ে থাকেন।
রাষ্ট্রদূত আল দুহাইলান জানান, সৌদি আরব প্রতিদিন গড়ে ৫ হাজার ভিসা প্রদান করে যা বাংলাদেশি অভিবাসী এবং মুসলিম হজযাত্রীদের জন্য বরাদ্দ রয়েছে।
গত ২০২৩ সালে প্রায় পাঁচ লাখ বাংলাদেশি সৌদি আরবে ওমরাহ পালন করেছেন, যা এর আগের বছরের তুলনায় ৩৭ শতাংশ বেশি।
রাষ্ট্রদূত আল দুহাইলান জানান, তার দেশ বাংলাদেশে আরো বিনিয়োগ করতে আগ্রহী এবং মাতারবাড়ী গভীর সমুদ্র বন্দর এবং বিশেষ করে আকওয়া পাওয়ারের মাধ্যমে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে প্রস্তাবিত সৌদি বিনিয়োগ সহজ করতে তিনি প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের সহযোগিতা চান।
তিনি সৌদি আরবের বাদশাহ খাদেমুল হারমাইন সালমান বিন আবদুল আজিজ আল সৌদ এবং যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের পক্ষ থেকে প্রধান উপদেষ্টার কাছে সৌদি জাতীয় দিবস উপলক্ষে অভিনন্দন বার্তা পৌঁছে দেন।
সৌদি রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘আমার সরকার বাংলাদেশে স্থিতিশীলতা দেখতে চায় এবং ইনশাআল্লাহ, আমরা বাংলাদেশ সরকারকে সমর্থন দিতে প্রস্তুত আছি।’
তিনি প্রধান উপদেষ্টাকে পবিত্র আল-কোরআন ও সৌদি আরবের জাতীয় পাখি বাজপাখির একটি রেপ্লিকা উপহার দেন।
Sharing is caring!