আজ বৃহস্পতিবার, ২১শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ৬ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ডিবি হারুন ও তার পরিবারের কর ফাঁকি, হিসাব জব্দে এনবিআরের চিঠি

admin
প্রকাশিত অক্টোবর ২৩, ২০২৪, ০৩:৩২ অপরাহ্ণ
ডিবি হারুন ও তার পরিবারের কর ফাঁকি, হিসাব জব্দে এনবিআরের চিঠি

কর ফাঁকিসহ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন অভিযোগে ঢাকা মহানগর পুলিশের সাবেক অতিরিক্ত কমিশনার (ডিবি) মোহাম্মদ হারুন-অর-রশিদ ও তার পরিবারের নামে থাকা ব্যাংক হিসাব জব্দে চিঠি দিয়েছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সেল-সিআইসি।

সোমবার (২১ অক্টোবর) এনবিআরের কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সেল (সিআইসি) থেকে দেশের সব ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে চিঠি দেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে। তাতে সাবেক ডিবি প্রধান ও তার পরিবারের সদস্যদের ব্যাংক হিসাব জব্দ করতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

হারুন ছাড়াও তার বাবা-মা, স্ত্রী, ছেলে, মেয়ে বা বোনের যৌথ নামে অথবা ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের নামে থাকা ব্যাংক হিসাবও জব্দ করতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

এনবিআর সূত্রে জানা যায়, হারুন পরিবারের মালিকানাধীন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের ব্যাংক হিসাবের তথ্যও তলব করেছে সিআইসি। এর আগে হারুন ও তার পরিবারের ব্যাংক হিসাব জব্দ করেছিল বাংলাদেশ ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ)।

এ বিষয়ে সিআইসির একজন কর্মকর্তা বলেন, ডিবি হারুনের অবৈধ সম্পদ অর্জনের বিষয়টি অনুসন্ধান করেছে দুদক। আর কর ফাঁকির বিষয়টি অনুসন্ধান করছে এনবিআর।

এর আগে গত ২৭ আগস্ট দুদকের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের সাবেক প্রধান হারুন অর রশীদ ও তার স্ত্রী শিরিন আক্তারের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দেয় আদালত।

গত ১৮ আগস্ট ডিবির তাদের অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নেওয়ার পর ২০ আগস্ট দুদকের প্রধান কার্যালয় থেকে বাংলাদেশ ব্যাংক, বিভিন্ন আর্থিক প্রতিষ্ঠান, সাব-রেজিস্ট্রি অফিস, ভূমি অফিস, পাসপোর্ট, কর অফিস ও নির্বাচন কমিশনসহ অর্ধশতাধিক প্রতিষ্ঠানে চিঠি পাঠায় দুদক।

সংস্থাটির উপ-পরিচালক জয়নাল আবেদীনের নেতৃত্বে তিন সদস্যের একটি কমিটি অনুসন্ধান কাজ করছে।

অভিযোগ আছে, বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের সময় প্রভাবশালী পুলিশের এই কর্মকর্তা রাজধানীতে দুই ডজন বাড়ি, অর্ধশতাধিক ফ্ল্যাট ও প্লটের মালিক হয়েছেন। এছাড়া, যুক্তরাষ্ট্র, দুবাই ও জেদ্দাসহ অন্যান্য দেশেও গড়েছেন অঢেল সম্পদ।

দুদক সূত্রে জানা যায়, সাবেক ডিবি প্রধান মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ কিশোরগঞ্জে নিজ এলাকায় গড়ে তুলেছেন ‘প্রেসিডেন্ট রিসোর্ট’ নামে বিলাসবহুল প্রমোদাগার। জেলার মিঠামইন উপজেলার ঘাগড়া ইউনিয়নের হোসেনপুর গ্রামে ৪০ একরেরও বেশি জায়গা নিয়ে রিসোর্টটি তৈরি করা হয়েছে। রিসোর্টটির প্রিমিয়াম স্যুটের প্রতিদিনের ভাড়া ২০ হাজার টাকা। সর্বনিম্ন ডিলাক্স রুমের ভাড়া প্রতিদিন ১০ হাজার টাকা। রিসোর্টটিতে শত কোটি টাকার বেশি বিনিয়োগ করা হয়েছে বলে ধারণা স্থানীয়দের।

২০২১ সালের ৩ সেপ্টেম্বর রিসোর্টটি আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করা হয়। আগের বছর অর্থাৎ ২০২০ সালের ৪ ডিসেম্বর প্রেসিডেন্ট রিসোর্টের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন হয়। পুলিশের আলোচিত-সমালোচিত সাবেক কর্মকর্তা হারুনের প্রতিষ্ঠিত প্রেসিডেন্ট রিসোর্টের ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন তার ছোট ভাই ডা. শাহরিয়ার। তিনি হলি ক্রিসেন্ট মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল থেকে এমবিবিএস পাস করেছেন।

রিসোর্টটিতে হারুনের পরিবারের পাঁচ থেকে সাত একর জায়গা আছে। বাকি অন্তত ৩৫ একর জায়গা ছিল অন্যদের।

উল্লেখ্য, গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর আত্মগোপনে আছেন সাবেক ডিবিপ্রধান হারুন অর রশীদ

Sharing is caring!