আজ রবিবার, ২৪শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ৯ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

আন্দোলনে গুলি চালানো আ.লীগ নেতা নিহতের মামলা তুলে নিতে আল্টিমেটাম

admin
প্রকাশিত অক্টোবর ২০, ২০২৪, ০৩:৫৪ অপরাহ্ণ
আন্দোলনে গুলি চালানো আ.লীগ নেতা নিহতের মামলা তুলে নিতে আল্টিমেটাম

জুলাই বিপ্লবের অংশ নেওয়া ছাত্র-জনতার বিরুদ্ধে করা নিহত আওয়ামী লীগ নেতার স্ত্রীর মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। দাবি আদায়ে প্রয়োজনে পুলিশ কমিশনার ও জেলা পুলিশ সুপারের কার্যালয় ঘেরাও করার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা।

শনিবার (১৯ অক্টোবর) রাত সাড়ে ৯টায় মহানগর কোতয়ালী থানার সামনে প্রেস ব্রিফিংয়ে এই ঘোষণা দেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন রংপুরের সমন্বয়ক নাহিদ হাসান খন্দকার।

শহীদ আবু সাঈদসহ সকল শহীদ পরিবারের দায়ের করা হত্যা মামলার চিহ্নিত আসামিদের গ্রেপ্তার এবং আওয়ামী সন্ত্রাসীদের অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারে ২৪ ঘণ্টা সময় বেঁধে দিয়ে তিনি বলেন, আমাদের দাবি আদায় না হলে পুলিশ কর্মকর্তাদের অপসারণে রংপুরে কঠোর আন্দোলন গড়ে তোলা হবে। আসামিরা প্রকাশ্যে ঘুরছে আর পুলিশ তাদের ধরছে না, এটা হতে পারে না। আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা এখনো ষড়যন্ত্র করছে অথচ পুলিশ চুপচাপ রয়েছে।

নাহিদ হাসান বলেন, গত ৪ আগস্ট রংপুরে ছাত্র-জনতার ওপর হামলার সময় অস্ত্র উঁচিয়ে গুলি করে নেতৃত্বদানকারী নিহত পরশুরাম থানা আওয়ামী লীগ সভাপতি ও সিটি কর্পোরেশনের কাউন্সিলর হারাধন রায় হারা গণপিটুনিতে মারা যায়। ঘটনার দুই মাস পর পুলিশ গত ২ সেপ্টেম্বর নিহতের স্ত্রী কনিকা রানীর করা হত্যা মামলা গ্রহণ করে। যেখানে ছাত্র-জনতার অজ্ঞাত ৪০০ থেকে ৫০০ জনকে আসামি করা হয়েছে। যাদের সবাই জুলাই বিপ্লবে অংশ নিয়েছিল।

তিনি আরও বলেন, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে জারি করা প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে জুলাই-আগস্ট বিপ্লবে অংশ নেওয়া যোদ্ধাদের নামে কোনো মামলা হবে না। কিন্তু কোন ইন্টারেস্টে রংপুরে পুলিশ সেই মামলা নিল? আমরা মনে করছি এর পেছনে গভীর ষড়যন্ত্র আছে। এই মামলা প্রত্যাহার করতে হবে। রোববারের (আজকের) মধ্যে মামলা প্রত্যাহার করা না হলে পুলিশ কমিশনারের এবং পুলিশ সুপারের কার্যালয় ঘেরাও করা হবে।

নাহিদ হাসান বলেন, পুলিশ শহীদ আবু সাঈদসহ শহীদদের মামলার এজাহারভুক্ত আসামিদের এখনো গ্রেপ্তার করতে পারেনি। কিন্তু তারা ছাত্র-জনতার বিরুদ্ধে মামলা নিয়েছে। এ সময় আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে শহীদদের হত্যার সঙ্গে জড়িতদের গ্রেপ্তার করা না হলে পুলিশ কমিশনার এবং ওসিসহ ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তাদের স্বেচ্ছায় সরে যাওয়ার দাবি জানান। যদি তারা সরে না যান তাহলে তাদের অপসারণ করতে যা যা দরকার সেটা করা হবে বলেও হুঁশিয়ারি দেন।

প্রেস ব্রিফিংয়ে আরও উপস্থিত ছিলেন- বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন রংপুরের সমন্বয়ক মুহম্মদ রাজিমুজ্জামান হৃদয়, জামিল হোসেন, শাকিল হোসেন, সাজ্জাদ হোসেন পৃথিবী, আর এস নাসিস, সাজ্জাদ হোসেন, আশিকুর রহমান, আফ্রিদি রাজসহ অনেকে।

প্রসঙ্গত, গত ৪ আগস্ট রংপুর মহানগরীর বেতপট্টিস্থ পুষ্টির গলি এলাকায় আন্দোলনরত ছাত্র-জনতার ওপর অস্ত্র দিয়ে গুলি করে আওয়ামী লীগ নেতা হারাধন রায় হারাসহ আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা। এ সময় ছাত্র-জনতা প্রতিরোধ গড়ে তুললে পিছু হটে তারা। ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া শুরু হলে মাটিতে লুটিয়ে পড়লে হারাধন রায় হারাসহ তার ভাগনে সবুজকে পিটিয়ে হত্যা করে প্রতিরোধকারীরা।

নিহত হারাধন রায় হারা রংপুর সিটি কর্পোরেশনের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ছিলেন। এ ছাড়া তিনি রংপুর মহানগর পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক ও মহানগর আওয়ামী লীগের পরশুরাম থানা কমিটির সভাপতির দায়িত্বে ছিলেন।

Sharing is caring!