আনসারদের চলমান আন্দোলনের মধ্যে, বাহিনীর সদস্যদের ‘রেস্ট টাইম’ প্রথা বাতিল করেছে সরকার।
আজ রোববার সচিবালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী এ সিদ্ধান্তের কথা জানান।
তিনি আরও জানান, চাকরি জাতীয়করণসহ আনসার সদস্যদের অন্যান্য দাবিগুলোর বিষয়ে একটি কমিটি গঠন করে সাত কার্যদিবসের মধ্যে সরকারের কাছে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।
আনসার ও ভিডিপির মহাপরিচালক মেজর জেনারেল আব্দুল মোতালেব সাজ্জাদ মাহমুদকে কমিটির আহ্বায়ক করা হয়েছে।
পরে একটি আন্তঃমন্ত্রণালয় কমিটি প্রতিবেদনের সুপারিশগুলো পরীক্ষা করে সিদ্ধান্ত নেবে।
আন্দোলনরত আনসার সদস্যদের সাত সদস্যের প্রতিনিধিদের সঙ্গে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা আজ ঘণ্টাব্যাপী বৈঠক করেন।
‘রেস্ট টাইম’ প্রথা সম্পর্কে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ‘আনসার আইনে বলা হয়েছে, একজন আনসার সদস্য টানা তিন বছর কাজ করার পর তাকে ছয় মাসের ছুটিতে পাঠানো হয়। এটাকে ‘রেস্ট টাইম’ প্রথা বলা হয়। তারা ছয় মাস পর আবার কাজে যোগ দিতে পারবে। কিন্তু ওই সময়টা বেতন না হওয়ায় দুর্বিষহ দিন কাটাতে হয় তাদের।’
‘এই প্রথা বিলুপ্ত করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এর মাধ্যমে তাদের চাকরি নিয়মিত করা হলো,’ যোগ করেন তিনি।
আনসার ও ভিডিপি সদরদপ্তরের কাছে প্রতি বছর বিভিন্ন সরকারি দপ্তর বা ইনস্টিটিউট থেকে গড়ে প্রায় ৫৫ হাজার সদস্য চাওয়া হয়। ৯০ দিনের প্রশিক্ষণ শেষে তিন বছরের জন্য আনসার সদস্যদের ওইসব প্রতিষ্ঠানের নিরাপত্তায় নিয়োগ দেওয়া হয়।
একজন আনসার সদস্য দৈনিক বেতন পান ৫৪০ টাকা। এছাড়া বাহিনীটির পক্ষ থেকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে তাদের জন্য রেশন সুবিধা বরাদ্দ দেওয় হয়।
তিন বছর পর আনসার সদস্যদের ছুটিতে পাঠানো হয় এবং সে সময়টা তারা কোনো বেতন পান না। এ কারণে চাকরি জাতীয়করণের দাবি জানিয়ে যাচ্ছেন আনসার সদস্যরা।
আজ ব্রিফিংয়ের সময় উপস্থিত ছিলেন তথ্য উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম। তিনি বলেন, ‘যেহেতু কমিটি গঠন করা হয়েছে, প্রতিবেদনগুলো বিশ্লেষণ করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। আমরা জাতীয় সংকটে আছি। অনেক কাজ আছে। এই দুর্যোগের মধ্যেও কমিটি সবকিছু বিশ্লেষণ করে সিদ্ধান্ত নেবে।’
তবে, প্রাথমিকভাবে ‘রেস্ট টাইম’ প্রথা বাতিল করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানান তিনি।
আশ্বাসের পরিপ্রেক্ষিতে আনসার আন্দোলনের আহ্বায়ক মো. নাসিম মিয়া জানান, তারা সাময়িকভাবে বিক্ষোভ কর্মসূচি প্রত্যাহার করে নিচ্ছেন।
তিনি বলেন, ‘আমরা আন্দোলন স্থগিত করছি। আনসার সদস্যরা তাদের কাজে ফিরে যাবে।’
‘আমরা তাদের সিদ্ধান্ত খতিয়ে দেখব এবং তারপরে আমরা আমাদের পরবর্তী কর্মপন্থা ঘোষণা করব। আমাদের এক দফা দাবি চাকরি জাতীয়করণ করা,’ যোগ করেন তিনি।
Sharing is caring!