ত্রিপাক্ষিক চুক্তি অনুযায়ী ভারতীয় সঞ্চালন লাইনের মাধ্যমে বাংলাদেশে আনুষ্ঠানিকভাবে বিদ্যুৎ সরবরাহ শুরু করেছে নেপাল। এরমাধ্যমে ভারতের পর তৃতীয় কোনো দেশে প্রথমবারের মতো বিদ্যুৎ রপ্তানি করল হিমালয়ের দেশটি।
শুক্রবার ভারত সরকারের জনসংযোগ বিভাগ প্রেস ইনফরমেশন ব্যুরো (পিআইবি) প্রকাশিত বিদ্যুৎ মন্ত্রণালয়ের বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
এতে বলা হয়, ভারতীয় গ্রিড ব্যবহার করে নেপাল থেকে বাংলাদেশে বিদ্যুৎ সরবরাহের কার্যক্রম আনুষ্ঠানিকভাবে আজ উদ্বোধন করা হয়েছে।
নেপালের রাজধানী কাঠমান্ডুতে ভার্চ্যুয়াল অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের বিদ্যুৎ-জ্বালানি উপদেষ্টা মো. ফাওজুল কবির খান, ভারতের বিদ্যুৎবিষয়ক মন্ত্রী মনোহর লাল ও নেপালের জ্বালানিমন্ত্রী দীপক খাডকা অংশ নেন।
গত অক্টোবরের শুরুতে নেপাল ও ভারতের সঙ্গে বিদ্যুৎ রপ্তানির এই ত্রিপক্ষীয় চুক্তি করে অন্তর্বর্তী সরকার। এর আগে ২০২৩ সালের মে মাসে নেপালের সাবেক প্রধানমন্ত্রী পুষ্প কমল দাহাল প্রচণ্ড ভারত সফরের সময় এই বিদ্যুৎ রপ্তানি সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সফরে দুই দেশ আঞ্চলিক জ্বালানি সহযোগিতা বৃদ্ধি এবং অর্থনৈতিক সংযোগ জোরদার করার প্রতিশ্রুতি দেয়।
সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, নেপাল থেকে ৪০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ ভারতীয় গ্রিড ব্যবহার করে বাংলাদেশে সরবরাহ করার পরিকল্পনা করা হয়।
এর ধারাবাহিকতায়, ২০২৪ সালের ৩ অক্টোবর কাঠমান্ডুতে একটি ত্রিপক্ষীয় বিদ্যুৎ বিক্রয় চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। চুক্তিতে অংশগ্রহণকারী প্রতিষ্ঠানগুলো হলো—নেপাল ইলেকট্রিসিটি অথরিটি (এনইএ), বাংলাদেশ পাওয়ার ডেভেলপমেন্ট বোর্ড (বিপিডিবি), ভারতের এনটিপিসি বিদ্যুৎ ব্যবসা নিগম (এনটিপিসি)। এই চুক্তি বিদ্যুৎ সরবরাহ কার্যক্রম শুরু করার পথ সুগম করে এবং উপ–আঞ্চলিক জ্বালানি সহযোগিতার নতুন দ্বার উন্মোচন করে।
এদিকে নেপাল বিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষের মুখপাত্র চন্দন কুমার ঘোষ চীনা সংবাদমাধ্যম সিনহুয়াকে বলেছেন, ‘ত্রিপক্ষীয় চুক্তি অনুযায়ী ২০২৪ সালে বাংলাদেশের কাছে নেপাল মাত্র একদিন বিদ্যুৎ বিক্রি করতে পারবে। এরপর ২০২৫ সালের ১৫ জুন থেকে আবারও বিদ্যুৎ সরবরাহ শুরু হবে।’ অর্থাৎ চলতি বছর (২০২৪ সালে) বাংলাদেশে শুধুমাত্র একদিনই বিদ্যুৎ পাঠাবে নেপাল।
ত্রিপক্ষীয় চুক্তি অনুযায়ী, নেপাল ২০২৫ সাল থেকে ২০২৯ সাল পর্যন্ত প্রতি বছরের ১৫ জুন থেকে ১৫ নভেম্বর পর্যন্ত বিদ্যুৎ সরবরাহ করবে।
দেশটি বাংলাদেশে বিদ্যুৎ পাঠাবে তাদের দুটি কেন্দ্র থেকে। এর মধ্যে ২৫ মেগাওয়াট ত্রিশূলি আর ২২ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আসবে চিলমি হাইড্রোপাওয়ার প্রজেক্ট থেকে। তবে ভারতের গ্রিডের সঙ্গে বাংলাদেশের গ্রিডের সংযোগে খুব বেশি বাড়তি ক্যাপাসিটি না থাকায় নেপাল মাত্র ৪০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ পাঠাতে পারবে।
ভবিষ্যতে যদি সঞ্চালন লাইনের ক্যাপাসিটি বৃদ্ধি করা হয় তাহলে নেপাল আরও বেশি পরিমাণে বিদ্যুৎ পাঠাতে পারবে বলে জানিয়েছেন মুখপাত্র চন্দন কুমার ঘোষ।
Sharing is caring!