আজ সোমবার, ২৫শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ১০ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সিলেটের বিশ্বনাথে দরিদ্র কৃষককন্যার সঙ্গে পশু চিকিৎসকের ‘প্র তা র ণা’

admin
প্রকাশিত অক্টোবর ২৫, ২০২৪, ০৮:৩৫ অপরাহ্ণ
সিলেটের বিশ্বনাথে দরিদ্র কৃষককন্যার সঙ্গে পশু চিকিৎসকের ‘প্র তা র ণা’

সিলেটের বিশ্বনাথে দরিদ্র এক কৃষককন্যা ও তার পরিবারের সঙ্গে প্রতারণার অভিযোগ উঠছে সাদেকুল ইসলাম নামে এক পশু চিকিৎসকের বিরুদ্ধে।

ওই চিকিৎসকের কথিত বিয়ের ফাঁদে পা দিয়ে নারীর পরিবার শিকার হয়েছেন চরম বিড়ম্বনার। প্রতারণার মাধ্যমে উচ্চাভিলাসী স্বপ্ন দেখিয়ে নিকাহ রেজিস্ট্রার না করেই কেবল মৌখিক ভাবে বিয়ে করেন ওই চিকিৎসক। পরে ৯ মাসের মাথায় সাদা কাগজে সই নিয়ে তালাক দেন। এ ঘটনায় উভয়কূল খুইয়ে অসহায় কৃষক পরিবার সংশ্লিষ্ট অফিসের দ্বারে দ্বারে ঘুরেও পাননি কোনো সুুরাহা।

জানা যায়, বিশ্বনাথ উপজেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তর ও ভেটেনারি হাসপাতালে দীর্ঘ দিন ধরে ভিএফএ পদে কর্মরত রয়েছেন নেত্রকোনার সদর উপজেলার বামুনীকুনা গ্রামের আবদুুল গফুরের ছেলে মো. সাদেকুল ইসলাম। গবাদি পশু চিকিৎসা করার সুবাদে তিনি উপজেলার রাজমোহাম্মদপুর গ্রামের দরিদ্র এক কৃষকের বাড়িতে যাতায়াত করতেন। তখন তার নজর পড়ে কৃষকের বিবাহিতা কন্যার প্রতি।

স্বামী পরিবারের সাথে সম্পর্ক ভালো না হওয়ায় বাবার বাড়িতেই থাকতেন ওই যুবতী। এক পর্যায়ে প্রেমের সম্পর্ক জমান মেয়েটির সাথে। পরে বিয়ের প্রস্তাব দিলে মেয়ে বিবাহিত ও তার নিজেরও (চিকিৎসক) স্ত্রী-সন্তান থাকায় নাকচ করে দেন পিতা। পরে ঘরবাড়ি নির্মাণ, সাথে নগদ অর্থ প্রদান ও পরিবারের যাবতীয় ব্যয় বহনের লোভ দেখিয়ে আদায় করেন সহজ-সরল কৃষক পরিবারের সম্মতি। নিজ খরচে কোর্টের মাধ্যমে আগের স্বামী থেকে ছাড়িয়েও আনেন ওই মেয়েকে।

পরে নিকাহ রেজিস্ট্রারের মাধ্যমে বিয়ের কথা থাকলেও গত বছরের ২৩ মার্চ সন্ধ্যায় দুইজন হুজুর নিয়ে হাজির হন কনের বাড়ি। নিকাহনামা পরে সম্পাদনের প্রতিশ্রুতি দিয়ে, সম্পাদন করা হয় নামমাত্র বিয়ের। দেয়া হয় নগদ লক্ষ টাকা দেনমোহর। তখন ধারণ করতে দেয়া হয়নি কোনো ছবি বা ভিডিও চিত্রও। ওইদিনই ফাহিমা নামের ওই যুবতীকে পৌরশহরের ভাড়া বাসায় নিয়ে তোলেন পশু চিকিৎসক সাদেকুল ইসলাম।

সংসার করেন প্রায় ৮ মাস। অভিযোগ রয়েছে- বিয়ের পর থেকে স্ত্রীকে প্রতিদিন তালাবদ্ধ করে রাখতেন সাদেকুল। বিষয়টি সহজভাবে নিচ্ছিলেন না ওই নারী। এ নিয়ে হয় বাকবিতণ্ডাও। এক পর্যায়ে ওই নারী চলে যান পিত্রালয়ে। এ ঘটনার পর আরও কিছুদিন তার কাছে যাতায়াত করেন সাদেকুল। এর মধ্যে গত বছরের ২৪ নভেম্বর ফাহিমার বাবাকে ডেকে নিয়ে, কিছু টাকা ধরিয়ে দিয়ে সাদা কাগজে নেন টিপসই। আগেই ভুল বুঝিয়ে নিয়ে রাখেন নারীর স্বাক্ষরও। পরে বন্ধ করে দেন যোগাযোগ।

এক পর্যায়ে সাদেকুল ওই নারীকে জানান, ‘আমি তোমাকে তালাক দিয়েছি। আমাদের উভয়ের সম্মতিতেই এটি সম্পাদন করা হয়েছে।’

এ ঘটনায় প্রাণিসম্পদ অফিসে বিচার প্রার্থী হয়েও কোনো বিচার পাননি তারা।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে পশু চিকিৎসক সাদেকুল ইসলাম বলেন, অনাথ হিসেবে মেয়েটিকে আমি আশ্রয় দিয়েছিলাম। আমি উনাদের ভালো করতে গিয়ে তারা আমার পিছু নিছে। তাদের বাড়িতে আসা-যাওয়ার সুবাদে পরিচয়। আগের বিয়ে বনিবনা না হওয়ায় সে ডির্ভোস নেয়। পরে অনত্র বিয়ে দিতে চাইলে আমি প্রস্তাব দেই। তারাও রাজি হন। আমার স্ত্রী-সন্তান আছে। সে কারণে এ বিয়ের বৈধ কোনো ডকুমেন্ট করা যায়নি। আর মানবিক কারণে আমি তাকে বিয়ে করি। পরে তাদের সাথে নানা বিষয়ে সমস্যা দেখা দেয়ায় তাদের সম্মতিতে দাবিকৃত অর্থ পরিশোধ করে লিখিত ভাবে আমরা পৃথক হই।

Sharing is caring!